মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে মূল্যায়ণের দাবি অব্যাহত।
পিএসসি চেয়ারম্যানের সাথে কোটা সংস্কার আন্দোলনের রূপকার সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদের সাক্ষাৎ
নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের রূপকার, দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সাংবাদিক ও জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল অদুদ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এক অনন্য নাম। ৫৬ শতাংশ কোটার কারণে তিনি বিসিএসে বঞ্চিত হয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। তিনি সেই ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার রিটের সংগঠক ও পিটিশনার। জুলাই বিপ্লবেও ছাত্র-জনতার পক্ষে যার ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। যেহেতু কোটা আন্দোলন থেকেই জুলাই বিপ্লবের সূত্রপাত এবং এক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদান, সেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে মূল্যায়ণের দাবি ছিল বিভিন্ন মহলের। সেই লক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মুনেমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় পিএসসির সচিব ড. সানোয়ার জাহান ভুইয়া ও বাংলাদেশ আনসারের অবসরপ্রাপ্ত উপমহাপরিচালক ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ৫৬% কোটার কারণে বিসিএসে বঞ্চিত হয়ে তিনি যে রিট দায়েরের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত করেন, সেই রিটের আইনজীবী ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের এডভোকেট ও হিউম্যান রাইটস এন্ড পীস ফর বাংলাদেশ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়া। রিটে পিটিশনার হিসেবে তার সাথে আরো ছিলেন বাসসের চীফ রিপোর্টার ও ল রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম দিদার ও তৎকালীন ঢাবি শিক্ষার্থী ও ন্যাশনাল ইনিশিয়াল এন্ড হাইস্কুল, জামগড়া, আশুলিয়ার সহকারী প্রধান শিক্ষক ও মাস্টার ট্রেইনার মো. আনিছুর রহমান মীর। সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদ ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে ‘কোটা সংস্কারের’ দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে বা আন্দোলনে গণজোয়ার তৈরি করে আন্দোলনটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কোটা সংস্কারের পক্ষে তার তৎকালীন কর্মস্থল দৈনিক আমাদের অর্থনীতিতে শত শত রিপোর্ট প্রকাশ করেন, যার মধ্যে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ঢাবি অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. এএসএম আতীকুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির সাবেক এমপি মরহুম অধ্যাপক মো. ইউনূস, শাম্মী আক্তার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ দেশের অনেক বরেণ্য রাজনীতিক-বুদ্ধিজীবির সাক্ষাতকারও রয়েছে। ফলে একসময় আন্দোলনটি গণআন্দোলনে রূপ নেয়, যার নেপথ্য কারিগর হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদ ও তার সহযোগীরা।
আন্দোলনে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া ছাত্রলীগ প্রার্থীকে হারিয়ে ডাকসুতে ভিপি নির্বাচিত হন নুরুল হক নূর। এমনকি ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখেন, যার প্রমাণও তৎকালীন পত্র-পত্রিকায় রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির এক আলোচনা সভায় তার ‘৩০ সেকেন্ডের প্রশ্নের উত্তর ৩০ মিনিটে’ দেন তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. আখরুজ্জামান। সেই ঐতিহাসিক প্রশ্নটি ছিল, আদালতের বাধ্যবাধকতায় কেন, আপনারা শিক্ষক হিসেবে নিজেদের নৈতিক অবস্থান ও দায়বদ্ধতা থেকে কেন ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেন না? চমকে দেয়া সেই প্রশ্নের উত্তরে সেদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকসু নির্বাচন করার ঘোষণা দেন এবং এই অবস্থান থেকে কোনোক্রমেই তিনি যে সরে যাবেন না, তারও ঘোষণা দেন ভিসি ড. আখতারুজ্জামান। পরিস্কার কমিটমেন্ট করেন। ফলে ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত হয়। ‘ডাকসু নির্বাচন, আদালতের বাধ্যবাধকতায় কেন?’ শিরোনামে ১৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদের যৌক্তিক অবস্থান থেকে লেখা ক্ষুরধার একটি কলামও প্রকাশিত হয় আমাদের সময় ডট কম ও আমাদের নতুন সময়ে।
মোহাম্মদ আবদুল অদুদ জুলাই বিপ্লবের দিনগুলোতে ছাত্র-জনতার পক্ষে দিন-রাত এক করে দেশের তরে কাজ করেছেন, যেন কাঙ্খিত পরিবর্তন আসে। শিক্ষার্থীরা যেমন দেয়ালগুলো রাঙিয়েছিল, তিনিসহ তার সহকর্মীরা তেমনি ছাত্র-জনতার পক্ষে ইনকিলাবের পাতাগুলোকে রাঙিয়েছিলেন। এখনো বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ, শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বপক্ষে গণমাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মেধা মননে অনন্য প্রতিভার অধিকারী মোহাম্মদ আবদুল অদুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের স্বনামধন্য তিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ত্রিপল মাস্টার্স করেছেন, রাবির গণযোগাযোগ বিভাগ থেকে প্রথম স্থানও লাভ করেছেন। তিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের মূলধারার সাংবাদিকতায় নিয়োজিত থাকা দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক তথ্যের খোঁজ রাখা, ইংরেজিতে বিশেষ পারদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন দক্ষ মানুষ। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য হিসেবে বা যে কোনো মন্ত্রণালয়ের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সাংবাদিকতা পেশায় দক্ষতার সর্বশেষ নজির হিসেবে তিনি গত ৫-১২ মে ২০২৪ তারিখে ৮ সদস্যের ‘বাংলাদেশি মিডিয়া ডেলিগেশনে’ পাকিস্তানের লাহোর, ইসলামাবাদ ও মারি সফরের সুযোগ লাভ করেন। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সদস্য, এক সময়ে ইউনিট চীফ, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলে দু’বার নির্বাচিত নির্বাহী সদস্য ও বর্তমানে কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম অব ঢাকার নির্বাচিত সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সরকার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সার্কুলার দিলে প্রায় ২০টি রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবি সংগঠন থেকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার নাম প্রস্তাবাকারে পাঠানো হয়। প্রস্তাব পাঠালে