সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
ইমরান হোসেন ইমু:
আগামী মাসেই রোজা। ঈদকে সামনে রেখে তখন বেচাকেনা জমে উঠবে। পোষাকের চাহিদা অনুযায়ী যেন সর্বোচ্চ যোগান দেয়া যায় সেই আশায় ব্যস্ত সময় পার করছে কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস কারখানার মালিকেরা। আর সেই সাথে দিন রাত পরিশ্রম করে একের পর এক পোষাক তৈরী করে যাচ্ছে কারখানার শ্রমিকেরা।
যে যত পোষাক তৈরী করতে পারবে সে তত বেশি পারিশ্রমিক পাবে। তাই শ্রমিকদের মাঝে দেখা যায় নাওয়া খাওয়া ভুলে পোষাক তৈরীর বাড়তি একটা প্রতিযোগীতা। কেরানীগঞ্জের আগানগর ও শুভাড্যা ইউনিয়নে অবস্থিত প্রতিটি পোষাক কারখানায় এখন চলছে ব্যস্ততা। ছোট বড়ো মিলিয়ে প্রায় তিন হাজারের বেশি কারখানা রয়েছে এখানে। ছেলে ও মেয়েদের জিন্স প্যান্ট, গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, পাঞ্জাবী, ফতুয়া,শার্ট,গেঞ্জি, মেয়েদের থ্রিপিস, ছোটদের পোষাকসহ প্রায় সব ধরনের পোষাক ই তৈরী হয় কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লীতে।
বছরের ১২ মাস ই পোষাক তৈরী হয় কারখানাগুলোতে। তবে রোযার ঈদকে সামনে রেখে কারখানাগুলোর ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুন। মূলত সারা বছর যে পোষাক উৎপাদন করা হয় তার ৬০ শতাংশ রোযার ঈদ কে কেন্দ্র করেই ।
কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লীতে প্রায় ২০০টির বেশি মার্কেট রয়েছে। আর এ সকল মার্কেটের ওপর তলায় ছোট বড় কম বেশি কারখানা রয়েছে। অধিকাংশ কারখানার আয়তন প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ স্কয়ার ফুট। তবে বড়ো কারখানাও রয়েছে অনেক। আকার ভেদে কারখানা গুলোতে ৬ থেকে ৪০ জন পর্যন্ত শ্রমিক কাজ করেন।
পশ্চিম আগানগর নাগর মহল রোডে অবস্থিত রুচি টাওয়ারের ৪ তলায় ভাই ভাই গার্মেন্টস এ গিয়ে দেখা যায় ১০/১২ জন শ্রমিক এক নাগারে কাজ করেই চলেছেন। কে আসছে কে যাচ্ছে তাতে কোন ধ্যান ই নেই তাদের। কারখানার মালিক আমির হোসেন জানান, প্রতি দিন এক এক জন কারিগর গড়ে ১০ টা শার্ট বানাতে পারে এক একটি শার্টের জন্য কারিগররা ৮০ টাকা করে মজুরি পায় । শার্ট গুলো পাইকারী ৪০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। গেল বছর তারা ১৫ হাজার পিস শার্ট তৈরী করেছিল । এবার ২০ হাজার পিস তৈরী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তারা।
আগানগর আলীমুল্লাহ টাওয়ার এর ৫ তলায় বয়েস ফ্যাশন এর কারখানা। কারখানায় গিয়ে দেখা যায় কারখানাটির মালিক সোহেল চৌধুরী এক কারিগরকে সাথে নিয়ে প্যান্ট মজুদের কাজ করছেন। কারখানাটির মালিক সোহেল চৌধুরী জানালেন , গত বছর ঈদে ৪০ হাজার পিস প্যান্ট উৎপাদন করেছেন তারা । এবছর লক্ষ মাত্রা ৫০ হাজার পিস। এসব প্যান্ট তারা জিলা পরিষদ মার্কেটে তাদের নিজস্ব সোরুম এ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা প্রতি পিস পাইকারী দরে বিক্রি করবেন তারা।
বয়েস ফ্যাশন কারখানার মতো কেরানীগঞ্জের পোষাক পল্লীর কয়েক হাজার কারখানার কারিগড়রা এখন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ শেখ কাওসার জানান, মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের পোষাকের যোগন দিতে কেরানীগঞ্জ বিখ্যাত। ঈদের বেচা কিনা শবে বরাতের পর ই শুরু হয়। তাই কারিগররা এখন শেষ সময়ের পোষাক তৈরীতে ব্যস্ত। এখানে কারিগড় অসন্তোষ বলতে নেই। মফস্বল থেকে আসা কারিগড়দের পরিবহন সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদ বেচাকেনা ভালো যাবে মনে হয়।##