বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১২ অপরাহ্ন
নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুম থেকে ভুল বার্তা দেয়ার কারণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এমন দাবি করেছে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ। বেপার টি কত টুকু সত্য তা খুটিয়ে দেখছে নেপাল বিমানবন্দরের সিনিয়র কর্মকর্তা রা। এটি একটি দুর্ঘটনা। নেপালের সিভিল এভিয়েশন দুর্ঘটনার কারণ জানতে কাজ করচ্ছে।
৬৭ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু নিয়ে ঢাকার শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুরে ছেড়ে যায় বিমানটি ঢাকা থেকে নেপাল এর উদ্দেশে। দুপুরের পরপরই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
এইমতো অবস্থায় ত্রিভূবন বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেম নাথ ঠাকুর জানান, অবতরণের সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয় এটি।
ঘটনা স্থল এ থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন রানওয়েতে বাঁক নেওয়ার সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তিনি বলেন, আমি সংযোগসড়কে ছিলাম। দেখলাম বিমানটি টার্মিনালকে পেছনে ফেলে দক্ষিণ দিকে দ্রুত বাঁক নিলো। এরপরই রানওয়ে থেকে তা অদৃশ্য হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বিশালাকারের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। তিনি জানান, খু্ব নিচে দিয়ে কন্ট্রোল টাওয়ারের ওপর দিয়ে উড়তে দেখেছিলেন বলেও জানান তিনি।
ঘটনার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ জানিয়েছেন, কন্ট্রোলরুমের ভুলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না।
সোমবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারায় ইউএস-বাংলার করপোরেট অফিসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তারা একেকবার একেক নির্দেশনা দিচ্ছিল, যে কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আমাদের পাইলট আবিদ সুলতান বিমান বাহিনীতে ছিলেন। ১৭ হাজার ঘণ্টা ফ্লাই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) থেকে পাইলটকে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়ায় টেকনিক্যাল গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। আমার মনে হয় না, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল। ইতোমধ্যে কন্ট্রোল রুম এবং পাইলটের কনভারসেশন ইউটিউবে এসেছে।
উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের দেড় ঘণ্টা পর আমরা দুর্ঘটনার খবর পাই। ওই ফ্লাইটে মোট ৩২ জন বাংলাদেশি ছিলেন, নেপালের ছিলেন ৩৩ জন এবং চীন ও মালয়েশিয়ার দুই জন ছিলেন ফ্লাইটে। এছাড়া দুইজন পাইলট, দুইজন ক্রু ও দুইজন কেবিন ক্রু ছিলেন। ফ্লাইটে প্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন ৬৫ জন এবং দুই শিশু ছিল।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উড়োজাহাজে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। এটা দুর্ঘটনা।
তিনি বলেন, গত তিন বছরে ইউএস-বাংলা ৩৬ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করেছে কোনো ত্রুটি ছাড়া। এই ফ্লাইটটিতেও কোনো ত্রুটি ছিল না। এটি একটি দুর্ঘটনা।
তবে পরিসংক্ষান তো অন্য দিকে ছুড়ে দিচ্ছে
যেমন নেপালে বিধ্বস্ত ইউএস বাংলার বোম্বাইডার ড্যাস কিউ৪০০ (S2-AGU) বিমানটি এর আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছিল। জানা যায়, ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একবার যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে ঘাসের ওপর পড়ে। সেসময় যাত্রীরা ভয়ংকর আতঙ্কিত হলেও কর্তৃপক্ষ একটি ব্রিফ দিয়ে দায় সেরেছিল। এয়ারক্রাফটটি ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ৭৪ জন যাত্রী নিয়ে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানটি রানওয়ের এক প্রান্তে ইউটার্ন নিয়ে যখন পার্কিং বে-তে আসছিল তখন একটি চাকা আটকে যায়।
সেদিন ঢাকা থেকে দ্রুততার সঙ্গে হেলিকপ্টারযোগে ইউএস-বাংলার দক্ষ প্রকৌশলীদের নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রকৌশলীরা বিমানটি পার্কিং বে-তে ফিরিয়ে আনেন এবং ফিরতি যাত্রীদের নিয়ে যথারীতি ঢাকায় ফিরে আসে।
ঠিক প্রায় আড়াই বছর পর সেই বিমানটিই আজ নেপালে বিধ্বস্ত হলো।
অবশেষে মেনে নিতে কিছুটা সমস্যা মনে হচ্ছে যে কন্ট্রোল রুম থেকে ভুল বার্তা নাকি
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের গাফুলুতিতে এই বিমান টি বিধ্বস্ত হয়েছে ভাবতে বাধ্য করছে বিষয়টি,তবে ভুল যারই হোক না কেন কোন পক্ষ পারবে কি এই জীবন গুলো পূনরায় তাদের প্রিয়োজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে।