কেরানীগঞ্জে আ.লীগ নেতা নিহত আ.লীগ ও বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর অগ্নিসংযোগ।
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি:
কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর অগ্নিসংযোগ এবং কালিনী ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক হাসান ইফতি নিহত তার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে কেরানীগঞ্জ মডেল উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৪ টায় এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেলে কালিন্দী, রোহিতপুর এবং তারানগর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিটের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এক যোগে হামলা চালিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এসময় অফিসে কোন নেতাকর্মী না থাকায় পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেনি। ভাংচুর শেষে ফেরার পথে কার্যালয়টিতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।পরে স্থানীয় লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগে (রবিবার) সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন ঘাটার চর এলাকায় গত ২১ জুলাই কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত ইস্পাহানি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ও অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেরানীগঞ্জের সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা আটি ভাওয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা তাতে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা মিছিল নিয়ে সামনে অগ্রসর হলে বড় মনোহরিয়া চৌরাস্তা এলাকায় ছাত্রদের মিছিলের ওপর পেছন থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করে। এতে মুহূর্তেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ছাত্র ভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তারা সংঘটিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে নেতাকর্মীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি করে বিভিন্ন দোকানপাটের ভেতরে আশ্রয় নেয়। এ সময় মডেল থানা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি আবু সিদ্দিক ও তারানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ফারুক অবরুদ্ধ হন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছয়টি মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগ ও পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এছাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুক এবং আওয়ামী লীগ নেতা আবু সিদ্দিকের বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে তাদের ব্যাবহৃত গাড়ী পুড়িয়ে দেয়।
এর কিছুক্ষণ পরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পুনরায় সংঘটিত হয়ে আবারো ছাত্রদের ধাওয়া দিয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা ঘাটার চর এলাকায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ভেতরে আশ্রয় নেয়। পরে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ঘেরাও করে ইট—পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং প্রধান ফটকে আগুন লাগিয়ে দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদের উপর গিয়ে আশ্রয় নিলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ছাদের গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে তাদেরকে গণধোলাই দেয়। এ সময় হুড়োহুড়ি করে ভবনের ভিতর ঢুকতে গিয়ে ও ভবনের উপর থেকে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে অন্তত বিশ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে ভবনে আটকে থাকা অন্তত ১০/১৫ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আন্দোলনকারীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
প্রায় দুই /তিন ঘন্টা ব্যাপী ধাওয়া পাল্টা—ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বিকেলের দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসে। এসময় বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কেরানীগঞ্জ মডেল উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে আওয়ামী লীগ কার্যালয় পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে, শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে গেছে। তবে কোন হতাহত ও কি পরিমাণ ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
এব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সম্পাদকঃ ইমরান হোসেন ইমু
অফিসঃ মাহফুজা প্লাজা (২য় তলা), কদমতলী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০
মোবাইলঃ ০১৭৫৬৬২৯৩০৫, ০১৮১৯-৫০১১২৫
বার্তা বিভাগঃ ০১৭৫৬৬২৯৩০৫
ইমেইলঃ songbadsobsomoy2@gmail.com