কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মাঝি হত্যাকাণ্ডের ৩জন আসামী র্যাবের হাতে আটক।
কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস খেয়া নৌকার মাঝি মনিন্দ দাস (৭০) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ৩ আসামি কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র্যাব-১০’র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি এনায়েত কবীর সোয়েব এ তথ্য জানান।
এর আগে গত বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) তাদেরকে উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া সাবান ফ্যাক্টরী গলি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফজলে রাব্বি (২১), মো. শরীফ (২০) ও আজিজুল শেখ (২২)
বলে জানা যায়।
এএসপি এনায়েত কবীর সোয়েব জানান, গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ছটার দিকে উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের চুনকুটিয়া চৌধুরীপাড়া টিপু মিয়ার বাড়ির সামনে অচেতন অবস্থায় গুরুতর জখমপ্রাপ্ত একজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯’র মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
পরে ওইদিন স্থানীয়ারা ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করে জানান, মৃত ব্যক্তির নাম মনিন্দ দাস (৭০), তার বাবা মৃত বরন দাস, তার বাড়ি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈর।
নিহত মনিন্দ দাস (৭০) খেয়া নৌকার মাঝি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বুড়িগঙ্গা নদীর সদরঘাট টু তেলঘাট রুটে নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ওইদিনও খেয়াঘাটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার নিজ ঘর থেকে বের হয়। সে যখন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের চুনকুটিয়া চৌধুরীপাড়া টিপু মিয়ার বাড়ির সামনে পৌছালে গ্রেফতারকৃত আসামীরা ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে উক্ত মাঝি’কে ঘেরাও করে। কিন্তু মাঝির নিকট কোন অর্থ না পেয়ে এবং ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে উক্ত মাঝির থুতনীর নিচে, নাভির উপরে, বুকের বাম পাশে ও পেটের উভয় পাশে একাধিক ছুরিকাঘাত করে নিঃসংশভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, ঘটনায় নিহত মনিন্দ দাসের ছেলে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা (যার মামলা নং-০৬/৯৮ (৫ ফেব্রুয়ারি), ধারা ৩০২/৩৪) পেনাল কোডে মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডটি সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রচারে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র্যাব এঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০’র একটি আভিযানিক দল র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় মাঝি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৩জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা উক্ত মাঝি হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা মাদকাসক্ত, পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী। তারা উক্ত খেয়া নৌকার মাঝি হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। এছাড়াও তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে ডাকাতিসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই এবং আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত ছিল বলে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানা যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সম্পাদকঃ ইমরান হোসেন ইমু
অফিসঃ মাহফুজা প্লাজা (২য় তলা), কদমতলী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০
মোবাইলঃ ০১৭৫৬৬২৯৩০৫, ০১৮১৯-৫০১১২৫
বার্তা বিভাগঃ ০১৭৫৬৬২৯৩০৫
ইমেইলঃ songbadsobsomoy2@gmail.com