রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন
কেরানীগঞ্জে নিজেকে নিজে অপহরন নাটক, র্যাব-১০ কতৃক রহস্য উদ্ধা।ইমরান হোসেন ইমু :
পরিবারের কাছ থেকে মটর সাইকেল কেনার জন্য ৫ লাখ টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহরন নাটক সাজাতে গিয়ে নিজেই ফেসে গেলেন কেরানীগঞ্জের আমবাগিচা ইউনিয়নের সদর রোডের আল ফরিদ পাপ্পু (২৫) নামক এক যুবক।
র্যাব ১০ এর কেরানীগঞ্জ কমান্ডার মেজর সৈয়দ ইমরান হোসেন জানান, গেল ৭ জানুয়ারী আল ফরিদ পাপ্পু অপহরন হয়। এর পরের দিন দুপুর বেলা তার পিতাঃ খালেক মিয়া ও তার বড়ো ছেলে র্যাব ক্যাম্পে এসে আমার কাছে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে তারা বলেন আল ফরিদ পাপ্পু গতকাল (৭ জানুয়ারী) থেকে নিখোজ এবং আজকে সকাল বেলা তার পিতার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে এবং পাপ্পুকে অপহরন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। মুক্তিপন হিসেবে ৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়। তার বাবার মোবাইলে যে নাম্বার থেকে কল এসেছে আমরা তা সংগ্রহ করি এবং নাম্বারটি ট্রেস করার চেষ্টা করি। নাম্বারটি বন্ধ পেলে প্রযুক্তির ব্যবহার করে জানতে পারি যে এটি কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকা থেকে ব্যবহৃত হয়েছে। বিষয়টা তখনি আমাদের সন্দেহ হয় এবং তাদেরকে জানাই যে হয়তো অপহরন আপনাদের কাছের কেউ করেছে অথবা আপনার ছেলে নিজেই জড়িত অপহরন ঘটনার সাথে। এর পরে অপহরনকারীরা টাকা নিয়ে বিভিন্ন সময় কল দিয়ে মিটফোর্ড, সদরঘাট, আইজিগেট সহ বিভিন্ন স্থানে যেতে বলে। র্যাব ১০ এর টিম মেম্বাররা এসময় সিভিল ড্রেসে তাদের সাথেই ছিল, যেন টাকা হস্তান্তরের সময় অপহরনকারীদের হাতে নাতে গ্রেপ্তার করতে পারে। পরবর্তীতে অপহরন কারীরা টাকা নেয় নি এবং ফোনে জানায় আগামীকাল টাকাটা নিবে।
এর পরের দিন ভোর সাড়ে পাচটার সময় অপহৃত আল ফরিদ পাপ্পু তার পিতার নাম্বারে ফোন দেয় এবং বলে সে অপহরন কারীদের নিকট থেকে পালিয়ে এসেছে এবং বসিলা ব্রীজের নিচে আছে। তার পিতা খালেক সাহেব সাথে সাথে র্যাব ১০ এ বিষয়টা জানায় এবং সাথে সাথে র্যাবের টিম সাদা পোষাকে ঘটনা স্থলে যায়। যাওয়ার পরে ছেলেটাকে উদ্ধার করলে তাকে খুব স্বাভাবিক মনে হয়। এবং সে আদৌ অপহরন হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এর পরে তাকে দীর্ঘক্ষন জেরা করার পরে সে নিজেই স্বীকার করে যে, অপহরন নাটকটা সেই সাজিয়ে ছিল। গেল কিছু দিন আগে তার বাবার কাছে মটর সাইকেল কেনার জন্য ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। তার বাবা টাকা দিতে অস্বীকার করায় সে তার কয়েকজন বন্ধু এবং বড়ো ভাই, রমজান (৩৬), সাগর (৪০), সবুজ (২৪), রায়হান (২০) কে নিয়ে অপহরন নাটকটা সাজায়। পরে যখন বুঝতে পারে তার পরিবার পেরেশানীর মধ্যে রয়েছে সে এই পরিকল্পনা বাদ দেয়। পাপ্পুর সাথে অপহরন নাটকে জড়িত ছেলে গুলার সম্পর্কে খোজ খবর নেয়া হয়েছে , তাদের বিরুদ্ধে এর আগে কোথাও কোন ধরনের অভিযোগের প্রমান পাইনি। মূলত তারা লোভে পরেই এবং বন্ধুকে সহযোগিতা করার জন্যই এ কাজটি করেছে। এ কারনে তাদের বিরুদ্ধে কোন এ্যাকশন নেয়া হই নি।