শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
ঢাকা মাওয়া হাইওয়েতে আন্তঃজেলা ডাকাতি চক্রের ৯ সদস্য গ্রেফতার।
কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু।
শীতের তীব্রতা ও ঘন কুয়াশাকে পুজি করে সাম্প্রতিকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল ও দক্ষিণ থানা। এসময় ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, নগদ ৫০,৪০০ টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন সাগর গাজী ওরফে শাওন (২৫), রুবেল (২৫), রাজিব (৩০), প্রাবন ((২২), ফাহিম (২২), আরিয়ান (২৩), হিমেল (২৩), হারুন (৩৮), শাওন (২৩)
আজ রবিবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, গত কয়েকদিন যাবৎ একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ঝিলমিল, প্রিয় প্রিয়াঙন, সাউথ টাউন আবাসিক এলাকা এবং সিরাজদিখানের নিমতলী এলাকায় বিভিন্ন পথচারী, ব্যাক্তিগত ও যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাতরা অসহায় লোকদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ঝিলমিলের জঙ্গলে নিয়ে সর্বস্ব লুটে নিত।
চক্রটি কখনো রাস্তায় গাছ ফেলে, কখনো রাস্তায় মূল্যবান জিনিস পত্র ফেলে রেখে লোভের ফাঁদে ফেলে লোকজনদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলতো, আবার কখনো কখনো একটি দল ঘাড়িতে ঢিল দিলে ড্রাইভার দেখার জন্য নিচে নেমে এলে যাত্রীদের জিম্মি করে টাকা-পয়সা স্বর্ণালংকার লুটে নিত। তাছাড়া ডাকাত দলটি ঝিলমিল আবাসিক এলাকার অভ্যন্তরে নির্জন বাড়িতেও ডাকাতি করতো।
তিনি আরও জানান গত ২৬ ডিসেম্বর ডাকাত দলটি ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় সুজন সরদার (৩০) নামে এই ব্যাক্তিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কৌশলে হাত পা বেধে তার সাথে থাকা নগদ টাকা ও দুইটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়, এসময় তাকে জিম্মি করে প্রতিবেশী জাকির মিয়ার বাসায় যায় ডাকাত দল। জাকির তার বাসার দরজা খুলে দেখে প্রতিবেশী সুজনের হাত-পা ও চোখ বাধা অবস্থায় রয়েছে। পরে ডাকাতরা জাকিরকেও বেধে ফেলে এবং প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বাড়িতে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়।
পরবর্তীতে এ ঘটনায় জাকির মিয়া (৪৭) বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(কেরানীগঞ্জ সার্কেল মোঃ শাহাবুদ্দিন কবীরের নেতৃত্বে একটি চৌকস তদন্ত দল ঘটনায় জড়িত চক্রটিকে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার একটি চৌকস দল কেরানীগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। তারা জানায় গত ৬ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জের সাউথ টাউন এলাকার হাইওয়েতে ব্যারিকেড দিয়ে মাওয়া গামী দুটি গাড়িতে ডাকাতি করে। এছাড়াও ২০ ডিসেম্বর ঝিলমিলের সামনে ৩২ জন চায়না নাগরিকসহ ৩৪ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি পর ডাকাতি করে। ডাকাতরা আরো জানায় যে, তারা শীত ও কুয়াশা বাড়ার সাথে সাথে গত বেশ কিছু দিন যাবৎ বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছিলো। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের কেরাণীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের এবং ঢাকা হাইওয়ের গজারিয়া, মেঘনা দাঘলকান্দি এলাকায় ডাকাতি করার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।