রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
চিত্রনায়িকা হত্যার ঘটনায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন মডেল থানা পুলিশ।
কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু।
চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলিম নোবেল ও ফরহাদ বাল্যবন্ধু। কিছুদিন আগে কাতার থেকে দেশে ফিরে বেকার জীবন যাপন করছে ফরহাদ। তাই বন্ধু নোবেলের কাছ থেকে প্রায়ই ধারদেনা করে চলত। ঘটনার দিন রবিবার (১৬ই জানুয়ারী) সকাল সাতটায় ফরহাদ নোবেলের কাছে ২০০০ টাকা ধার এর জন্য যায়। এসময় ড্রইংরুমে তাকে বসিয়ে শিমু চা খেতে দেয়। ফরহাদ চা খেতে খেতেই শুনতে পারে বেডরুমে শিমু ও নোবেলের সাথে তুমুল ঝগড়া লেগেছে। একপর্যায়ে সে বেডরুমে গিয়ে দেখে শিমু এবং নোবেল এর মধ্যে হাতাহাতি হচ্ছে, এতে নোবেল পেরে উঠছে না। বন্ধুকে সাহায্য করতে এগিয়ে যায় ফরহাদ। পরে একজন বুকের উপর বসে হাত চেপে ধরে আরেকজন গলাটিপে হত্যা করে শিমুকে। হত্যার পর লাশ গুম করতে দুজনে মিলে চটের বস্তার লাশটি ভরে শিমুর ব্যবহৃত গাড়িতে তোলে। এরপর ঢাকার মিরপুর আশুলিয়া বেরিবাঁধ সহ বেশ কয়েক জায়গায় ঘুরে সর্বশেষ রাত নয়টার দিকে কেরানীগঞ্জ হযরতপুর ইউনিয়নের আলীপুর ব্রিজের পাশে ফেলে রেখে যায়।
চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী নোবেল ও ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে শেষে সংবাদ সম্মেলন এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুর ১২টায় সহকারী পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) অপরাধ হুমায়ুন কবির কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান আসামি ফরহাদ ও নোবেল রিমান্ডে থাকাকালিন উপরোক্ত ঘটনা ১৬৪ ধারায় বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে শিমুর হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর পর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে আসামিরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
তিনি আরো জানান, নোবেল প্রথমে একাই শিমুকে হত্যা করে পরে ফরহাদকে ফোনে ডেকে এনেছে বলে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অধিকতর তদন্তে পরে তারা স্বীকার করে যে দুজনে মিলেই হত্যা করেছে।
উল্লেখ্য: এর আগে গত সোমবার(১৭ই জানুয়ারী) সকালে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর লাশ কেরানীগঞ্জের আলিপুর ব্রিজের পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ঘটনার পরপরই সন্দেহভাজন হিসেবে তার স্বামী সাখাওয়াত আলিম নোবেল ও বন্ধু ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে নিহত শিমুর বড় ভাই কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা শিমুর স্বামী নোবেল ও ফরহাদ এর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে।